এমন শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা শিক্ষার্থীদের নৈতিক-মানবিক হতে শেখাবে: শিক্ষা উপদেষ্টা
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, জুলাই মাস আমাদের জাতির জন্য এক গর্বের মাস। এই মাসে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে শহীদদের স্মরণে বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। একই সঙ্গে, ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার ক্ষেত্রে কারিগরি শিক্ষাকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে উল্লেখ করে এর গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) সকালে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার গোকুলদাশেরবাগ এলাকায় অবস্থিত জামিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম
প্রফেসর আবরার তাঁর বক্তব্যে কারিগরি শিক্ষার প্রতি সমাজের অনীহার বিষয়টি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বর্তমানে চাকরির সুযোগ সীমিত হওয়ায় দেশে ও বিদেশে কারিগরি শিক্ষার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। অভিভাবকদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান, সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে। শিক্ষা উপদেষ্টা এমন কারিগরি শিক্ষা চালুর কথা বলেছেন যার দেশীয় ও আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের সেভাবে গড়ে তোলার জন্য তিনি সরকারের বিশেষ মনোযোগ কামনা করেন।
জুলাই আন্দোলন ও নতুন শিক্ষা ব্যবস্থার লক্ষ্য
শিক্ষার্থীদের ভূয়সী প্রশংসা করে উপদেষ্টা বলেন, “বিগত সময়ে আমাদের কথা বলার অধিকার ছিল না; আমাদের প্রজা বানিয়ে রাখা হয়েছিল।” তিনি উল্লেখ করেন, শিক্ষার্থীরা জুলাই আন্দোলনের মাধ্যমে এই অবস্থা থেকে মুক্তি এনেছে এবং ‘নতুন বাংলাদেশ’-এর সূচনা ঘটিয়েছে। এই নতুন যাত্রার দায়িত্ব আমাদের সবার ওপর বর্তেছে।
তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামীতে নির্বাচনের মাধ্যমে যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় আসবে, তারা সাধারণ মানুষের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করবে। ড. আবরার জোর দিয়ে বলেন, এখন থেকেই আমাদের এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যা শিক্ষার্থীদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করবে, নৈতিক ও মানবিক হতে শেখাবে। তিনি কামনা করেন, এই শিক্ষা ব্যবস্থার সূচনা আমরা যেন করে যেতে পারি এবং তা ভবিষ্যতেও যেন বলবৎ থাকে।
শহীদ স্মরণ ও আহতদের প্রতি সংহতি
প্রফেসর আবরার পুনর্ব্যক্ত করেন যে, জুলাই আমাদের গর্বের মাস। তিনি প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে জুলাই মাসে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শহীদদের স্মরণ করার আহ্বান জানান। এছাড়াও, আন্দোলনে যারা জড়িত ছিলেন তাদের ধন্যবাদ জানানো এবং যারা আহত হয়েছেন, তাদের প্রতি সাধ্যমতো সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র তার সাধ্যমতো করছে, তবে যারা পঙ্গু হয়েছেন বা তাদের পরিবারকে সাহায্য করা সম্ভব হলে সেই দায়িত্ব আমাদের সবার।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, বন্দর উপজেলা ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।