ঈদের বাজারে নতুন নোটের দাম চড়া
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: ঈদের আনন্দ শুধু নতুন জামা-জুতোয় নয়, ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করা হয় নতুন নোটের মাধ্যমেও। শিশু-কিশোরা ঈদের সালামি হিসেবে নতুন নোট পেলে খুশি হয়। তবে এবারের ঈদে হয়তো তাদের মুখের হাসি কিছুটা ভাটায় পড়তে যাচ্ছে। বাজারে নতুন নোটের দাম এবার বেশ চড়া। ঈদের আগে নতুন নোট না ছাড়ার সিদ্ধান্তের কারণে আগের নোট বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গতবছরের তুলোনায় ২০০ থেকে ২৫০ টাকা বেশি দামে ক্রেতাদের কিনতে হচ্ছে চকচকে নতুন নোট।
শনিবার (২২ মার্চ) সকালে নগরীর ১নং রেল গেট এলাকা ঘুড়ে পাওয়া যায় এমন চিত্র। ২, ৫, ১০, ২০, ৫০ টাকাসহ সব ধরনের নতুন নোট কিনলে আগের চেয়ে বাড়তি টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। বাড়তি দামের কারণে কেউ কেউ দর কষাকষি করে২০-৩০ টাকা কম নিচ্ছে, কেউ আবারএবার নতুন নোট নেওয়া থেকে বিরত থাকছে। নগরীতে ১০ টাকার এক বান্ডিল (১০০ পিস) নোট কিনতে বিক্রেতারা হাকাচ্ছেন ১৫০০ টাকা। একই সাথে ২০ টাকা নোটে হাজারে ৪০০ টাকা, ৫০ টাকার নোটে হাজারে ৭০ টাকা এবং ১০০ টাকার নোটে হাজারে ৪০ টাকা হাকাচ্ছেন তারা। নতুন নোটের দাম বেশি হওয়া পুরনো টাকা দিয়ে এবার সালামি দেওয়া কথা ভাবছেন অনেকেই।
এ বিষয়ে সাহেদ হাসান বলেন, ‘প্রতিবছর নিজের ছেলেকে ও বোনের ছেলে-মেয়েকে ঈদ সালামি দিতে নতুন টাকা নেই। কিন্তু এবছর নতুন টাকার দাম অনেক। ব্যাংক থেকেও আপাতত ১০,২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট দিচ্ছে না। ৫০০ টাকা ও ১ হাজার টাকার নোট আছে, কিন্তু সেগুলো দিয়ে তো সালামি দেওয়া যায় না। এখন ছোট ছেলেকে বোঝাবো কিভাবে সেই চিন্তায় আছি।
বেসরকারি চাকরিজীবী ফাহমিদা বলেন, ‘বছরে ২ ঈদে বাচ্ছাদের নতুন টাকা না দিলে ওদের খুশিটাই যেন কমে যায়। তবে সরকার পতনের পর শুনেছি টাকা থেকে বঙ্গবন্ধুর ছবি বাদ দেওয়া হবে। ইন্টারনেটে নতুন টাকার অনেক রকম, অনেক রংঙের নকশাও দেখছি। আশা ছিলো এবারের ঈদে হয়তো নতুন নকশার টাকা পাবো, কিন্তু তা হলো না। খবরে দেখলাম নতুন নকশার টাকা আসবে এপ্রিলে। এবারের ঈদে আগের নতুন টাকা নিতে হবে। তবে এখন তো সেই আগের টাকারই দাম অনেক বেশি। বাচ্চাকে সালামি দিতে পুরোনো টাকাই ভরসা।’
সম্প্রতি নতুন টাকার নোট ছাড়া বন্ধের বিষয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য পরামর্শ দেওয়া হলো। পাশাপাশি ব্যাংকের শাখায় যে নতুন নোট গচ্ছিত রয়েছে, তা বিনিময় না করে সংশ্লিষ্ট শাখায় সংরক্ষণ করার জন্য বলা হলো। পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট দ্বারা সকল নগদ লেনদেন কার্যক্রম সম্পাদনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছিল, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ১৯ মার্চ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত নতুন নোট বিনিময় করা হবে। এবার ৫, ২০ ও ৫০ টাকার নতুন নোট দেওয়ার কথা ছিল। নতুন এসব নোট বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে বিতরণ করার কথা হবে। সেভাবে নতুন টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রস্তুতও করা হয়েছিল। কিছু ব্যাংকে নতুন টাকা পৌঁছেও গিয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু মহল শেখ মুজিবর রহমান ছবি সম্বলিত নোট নিয়ে আপত্তি তুললে বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নোট বিনিময় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।