ইসলামিক দলগুলো এক হলে আ.লীগ-বিএনপি চাইলেও মোকাবেলা করতে পারবেন না: মাও. ফেরদাউসুর
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: জেলা জামায়াতে ওলামায় ইসমালির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, রিক্সাওয়ালা, দোকানদার, বাজারের সবজিওয়ালা পর্যন্ত আমাকে জিজ্ঞেস করে আপনারা এক হয়ে পাড়েন না ? এই দেশের তৃণমূল পর্যায়ের মানুষ চায় ইসলামী সমস্ত দলগুলো একসাথে হোক। না হওয়ার কারণ, এই দেশের মানুষদের মগজে যদি এটা বুঝতে যায় যে ইসলামিক সংগঠন দেশ পরিচালনা করলেই, ইসলাম প্রতিষ্ঠা হবে তাহলে উপরের মহলে যারা আছে তারা আর গুটি চলতে পারবে না। তারা চিন্তা করবে, এটা যদি হয়ে যায় তাহলে তো তাহলে ঘুষ খেতে পারবো না, শোষণ করতে পারবো না, বৈষম্য করে তাদের রক্ত খেতে পারবো না।
শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাষাঢ়া জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ইসলামী দলসমূহ ঐক্যে ও আমাদের করণীয় শীর্ষক এ আলোচনা সভায় প্রথান অতিথির বক্তব্য এ কথা বলেন মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
সভায় তিনি আরও বলেন, এই দেশের বিপ্লব তখন হয়েছে, যখন মানুষের মাঝে ঘুম, খুন ও নির্যাতন বৈষম্য বেড়েই যাচ্ছে। রাতের আধারে যাকে মন চায় তাকেই তুলে নিয়ে যায়, গুম করে ফেলে। এই ছোট ছোট ক্ষোভ গুলো জমা হতে থাকে আর তখনই তৃণমূল পর্যায় থেকে আওয়াজ আসলো আমাদের অধিকার আমাদেরই আনতে হবে। এই আন্দোলনে সামনে ছিল ছাত্র-ছাত্রী তৌহিদী জনতা আর পিছনে বড় বড় শক্তিগুলো তাদের সাপোর্ট দিলো।
মাও. ফেরদাউসুর রহমান বলেন, যে ভারতীয় শক্তিকে যুদ্ধ ছাড়া বিতারিত করা যায় না সেই শক্তিকে ছাত্ররা বিতাড়িত করেছে। ঠিক তেমনি আমরা যদি চিন্তা করি সকল ইসলামিক দলগুলো এক হবো, তাহলে আমাদের কেউ রাখতে পারবে না। যারা গুটি চলছে তাদের এই অসৎ উদ্দেশ্য আমরা আর বাস্তবায়ন হতে দেব না। আজ আমরা চিন্তা করি আমার শ্রমিকের অধিকার আদায় করব। তাহলে সকল ইসলামী দলগুলো বাধ্য হবে একসাথে কাজ করতে। আমাদের করণীয় হলো আমরা যদি একজন রিক্সাওয়ালা, সবজিওয়ালাও হই তাহলেও এক প্রতিবাদী কন্ঠ ডাক দিলে বিপরীতে যত বড়ই শক্তি হোক তারা কাপতে থাকে। এজন্য আমাদের প্রতিবাদী হতে হবে। আজ দেশ সাধীনা হলেও দেখেন আজ এক এক জায়গায় এক এক ইসলামী দল গুলো সভা সমাবেশ করছে। তাদেরও আল্লাহ এক, নবী এক, মিশন এক। আমাদেরও আল্লাহ এক, নবী এক, মিশনও এক। এই ইসলামিক দল গুলো আজ যদি এক কাতারে দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারি তাহলে এই আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি চাইলেও ইসলামের মোকাবেলা করতে পারবেন না। এই জন্যই আমরা অধিকারের কথা বলি এজন্যই আপনাদের ভেতরের ঘুমন্ত আত্মাকে জাগ্রত করার চেষ্টা করি। কারণ আমাদের দেখতে কষ্ট লাগে যখন আমার শ্রমিকের রক্তের ওপর বসে, এসির ভিতরে থেকে আমার শ্রমিককে ধমক দেয়, রক্ত চক্ষু দেখায় তখন খুব কষ্ট লাগে। শ্রমিকদের রক্তের টাকায় টেল কিনে গাড়িতে চলে। আবার শ্রমিকদের রক্ত চুষে খায়। এই সৌমিত্রা না থাকলে ওদের গাড়ি, ফ্যাক্টরি থাকত না। তাদের চোখে আঙুল দিয়ে এটা বুঝাতে হবে আমরা আসল, তোমরা ভুয়া। আমরা এই প্রতিবাদ করতে পারলে তারা এই রক্তচক্ষু দেখাবে না। তারা সন্তানদের মত শ্রমিকের পালন করবে, অন্যায় করার আগে চিন্তা করবে। এই সন্তানদের লালন পালন না করার কারণে বিভিন্ন কারখানায় আগুন লাগে।
মাও. ফেরদাউসুর রহমান আরও বলেন, তাই আমাদের আহ্বান সকল ইসলামের পথে আসেন। ধৈর্য হারানোর কিছুই নাই, রুপরেখা হবে। এদেশে যে পরিস্থিতি সেখানে আমি যদি এক না হয় তাহলে জনগণ আমাকে পিটিয়ে এক করবে। আমি যদি এক কাতারে না দাঁড়াই তাহলে জনগণ আমাকে একই কাতারে দাঁড় করাবে। এক কাতারে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হবে। আপনাদের প্রতিবাদ থাকলে তাহলে আর আলাদা আলাদা প্রোগ্রাম করতে পারবো না। এখন মানুষ বোকা না, জুম্মার নামাজে নতুন টুপি, পাঞ্জাবি পরে ভাষণ দিয়ে আসলে মানুষ বুঝে আপনি কত বড় বাটপার। আমাদের অধিকার আমাদের বুঝে নিতে হবে, অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে। অধিকার আন্দোলন আমরা কাধে কাধ মিলিয়ে কাজ করবো
সভায় মহানগর জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাও কামাল উদ্দিন দায়েমীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশেষ অতিথি মহানগর ওলামা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতি হারুনুর রশিদ, জেলা খেলাফতে মজলিসের সাধারণ সম্পাদক মাও এমদাদুল্লাহ, মহানগর খেলাফতে যুব মজলিসের সভাপতি মীর আহমাদুল্লাহ ফুয়াদ, মহানগর ওলামা পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আব্বাস। জমিয়াতে ওলামায় ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মোনাওয়ার হোসাইনের সঞ্চালনায় বিশেষ আলোচক হিসেবে ছিলেন, তালিমুল সুন্নাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক শরীয়তপুরী।