আড়াইহাজারে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার, স্বামীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজারে আসমা আক্তার (২৫) নামে এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। রবিবার (২৮ জুলাই) দিনগত রাতে মাহমুদপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী এলাকা হতে গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আসমা আক্তার আড়াউহাজার উপজেলার গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রদী এলাকার শালু মিয়ার কন্যা। নিহতের স্বামীর নাম আমজাদ হোসেন (৩০)। সে মাহমুদপুর ইউনিয়নের কল্যান্দী এলাকার মৃত কবির হোসেনের ছেলে।
নিহতের স্বজনরা জানান, প্রায় ৭ বছর আগে আমজাদের সাথে আসমার বিয়ে হয়। তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে আমজাদ মোটা অংকের টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য আসমাকে দৈহিক ভাবে নির্যাতন করতো ও প্রাণ নাশের হুমকী দিত। গেল ঈদুল আযহার পরও আসমাকে মারপিট করে যৌতুকের জন্য তার পিত্রালয়ে পাঠিয়ে দিলে পিত্রালয় থেকে নগদ দেড় লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়। এর আগেও পিত্রালয় থেকে দেয়া প্রায় দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার বিক্রি করে দিয়ে টাকা পয়সা নষ্ট করে ফেলে আমজাদ। কিন্তু তাতেও আমজাদ সন্তুষ্ট না হয়ে আসমার উপর অত্যাচার নির্যাতন অব্যাহত রাখে। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যায় আমজাদ ও তার পরিবারের লোকজন আসমাকে একই কারণে মারধর করে শ্বাসরোধে হত্যা করে, ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য ঘরে এক পেকেট বিষাক্ত দ্রব্য (স্থানীয় ভাষায় কেড়ির বড়ি) এনে টেবিলের উপর রেখে দেয়। কিন্তু বড়ির পেকেট টি ছিল অক্ষত। নিহতের পরিবারের দাবী ওই পেকেট থেকে কোন বড়ি খোলা বা খাওয়া হয়নি। আমজাদের পরিবারের সদস্যরা লোকদেখানোর জন্য আসমাকে প্রথমে আড়াইহাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার এখানে তার চিকিৎসা করা সম্ভবনা না বলে আসমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। কিন্তু আমজাদ তাকে রেফার অনুযায়ি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে না নিয়ে নারায়ণগঞ্জ পপুলার হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার আসমাকে মৃত ঘোষণা করেন। ফলে আমজাদ তড়ি ঘড়ি করে আসমার লাশ এ্যম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল থেকে বের করে বাড়ীতে নিয়ে এসে লাশ বাড়িতে রেখে স্বপরিবারে পালিয়ে যায়। সংবাদ পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সোমবার সকালে নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।
এ ব্যাপারে আড়াইহাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (অফিসার ইনচার্জ) মোহাম্মদ আহসানউল্লাহ লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের (ভিক্টোরিয়া) মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। নিহতের বাবা শালু মিয়া বাদী হয়ে থানায় আত্মাহত্যার প্ররোচণার একটি মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।