আলোক প্রজ্জোলন কর্মসূচিতে নেতৃবৃন্দ ‘ত্বকিসহ সকল হত্যার বিচার চাই’
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা বিচারের দাবিতে আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি পালন করেছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে এ আলোক প্রজ্বলন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। ত্বকি,মিঠু, ভুলু, চঞ্চলসহ সকল হত্যার বিচারের দাবিতে বক্তব্য রাখেন নেতৃবৃন্দ। এরপর শিশু শিল্পিদের আর্ট ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শেষ হয়।
নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এড. জিয়াউর ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন, নিহত ত্বকীর বাবা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রফিউর রাব্বি, খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি রথীন চক্রবর্তী, মন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের সদস্য সচিব কবি সাংবাদিক হালিম আজাদ, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক এড. মাহাবুবুর রহমান মাসুম, জেলা গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, ন্যাপের জেলা সাধারণ সম্পাদক এড. আওলাদ হোসেন প্রমুখ।
বক্তব্যে রফিউর রাব্বি বলেন, প্রশাসনের একটি বাহিনী হচ্ছে পুলিশ, শেখ হাসিনা সরকার থাকাকালীন অবস্থায় এই বাহিনীকে কুলুষিত করা হয়েছে। জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর কারণে পুলিশ বাহিনী একটি নিকৃষ্ট বাহিনী হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। এটা হলো শাসন গোষ্ঠীর ইচ্ছার প্রতিফলন। এ পুলিশ সদস্যরা আমাদেরই মতন গ্রাম থেকে শহর থেকে উঠে আসা আমাদেরই সজন। কিন্তু তাদেরকে কুলুষিত দূষিত করেছে শেখ হাসিনা। আমরা পুলিশের একটি পরিশুদ্ধ রূপ দেখতে চাই। পুলিশদের অন্য কোন দেশ থেকে আনতে পারব না তাই তাদেরকে আমাদের জন্য দেশের জন্যই গড়ে তুলতে হবে। এই কাজটাই সরকার করবে। এর বিরুদ্ধে প্রশাসনের শক্ত অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। বিভিন্ন জায়গায় মাজারে আক্রমণ করা হয়েছে, গত শুক্রবারও একটি মাজারে হামলা চালানো হয়েছে। মাজারের আক্রমণের বিষিয়ে আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। সমাজে বিভিন্ন ধর্মের বিশ্বাসী মানুষ রয়েছে, এমনকি ইসলামেও বিভিন্ন মতাদর্শী ব্যক্তির বিশ্বাসী মানুশ আছে। সবার নিজস্ব বিশ্বাস ও ধর্ম নিয়ে তাদের থাকতে দিতে হবে। এটা সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে। একটি মত অন্য একটি মতকে টুকরি চেপে ধরবে একটি সভ্য দেশে এটা আমরা কখনোই আকাঙ্ক্ষা করি না। আমরা ত্বকি, সাগর, রুনি তনু, হত্যার বিচার চাই। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে চঞ্চল-মিঠুসহ যারা ওসমান পরিবারের কাছে হত্যা হয়েছে তাদের সকলের হত্যার বিচার চাই। সাত বছর আগে লিংক রোডের সাইরি আর শুভ্র প্রাণ হারিয়েছিল আমরা তার হত্যার বিচার চাই। এই বিচারের মধ্যে দিয়ে সরকার তার চরিত্রের প্রকাশ ঘটাবে। তাদের বিচার দেখে আমরা বুঝতে পারব এই সরকার জনবান্ধব বা আমাদের আকাঙ্ক্ষার সরকার কিনা। এসবের মধ্যে দিয়েই আমরা বুজবো সরকার কি জনগণ বান্ধব কিনা।
গণসংহতির তরিকুল সুজন বলেন, আজকে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সংগঠক সাংবাদিক শাহরিয়ার শুভ্রর হত্যাকান্ডের সাত বছর হয়েছে। সাত বছর পেরিয়ে গেলেও এই সাত বছরে শুভ্র হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। বাংলাদেশে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি বজায় আছে। এই সংস্কৃতি বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ৫ তারিখের পর থেকে ছাত্র জনতার যে অর্জন, সেই অর্জনের মধ্য দিয়ে আজকে যদি ত্বকী, আশিক, চঞ্চল, মিঠু, শুভ্র হত্যাকান্ডের বিচার না হলে ছাত্র জনতার অর্জন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। আমরা বিশ্বাস করি ছাত্র জনতার আন্দোলনে যে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, তারা এ বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না। বিচারহীনতার যে সংস্তৃতি দীর্ঘ দিন ধরে যে বজায় ছিল, সেটাকে তারা ভাঙবেন। সেই সাথে অনতি বিলম্বে ত্বকী, আশিক, চঞ্চল, মিঠুসহ শুভ্র হত্যাকান্ডের বিচার হতে হবে। নারায়ণগঞ্জবাসী বিচার চাই। আমরা অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে আহ্বান করি, অতিদ্রুত এ সমস্ত হত্যাকান্ডের বিচার করুন। এ বিচারের মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার যে অর্জন সেটাকে সম্মুনত রাখুন। ছাত্র জনতার অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না।