আমাদের মধ্যে মির্জাফর-বেইমান রয়েই গেছে: সেলিম ওসমান
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন, ‘এখন অগ্নি সন্ত্রাস, ধর্মের নামে সন্ত্রাস, মানুষ পুড়িয়ে মারা। কার জন্য? আপনারা দেশের জন্য কাজ করবেন। এখন আমরা উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছি। দুইদিন বন্ধ দিয়ে আবার শুরু করে। আমাদের স্বস্তির দরকার আছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া আমাদের বিপদ থেকে কেউ উদ্ধার করতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি না।’
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির উদ্যোগে বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাতে নগরীর চাষাঢ়ায় অবস্থিত বিকেএমইএ’র কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
এসময় ৯ টি জাতীয় ভিত্তিক ও ৩৫টি জেলা ভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং ডাক্তার ও আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সেলিম ওসমান বলেন, ‘আমার মায়ের নির্দেশে আমি নির্বাচন করেছি। হোসেন মোহাম্মদ এরশাদ সাহেব আমাকে ফোন করে বলেছেন, তুমি তোমার মত চলবে আমার নির্বাচনটা করে দাও। নাসিম ওসমানের অভাবে আমাকে নির্বাচন করতে হলো। তিনি বন্দরের এক প্রোগ্রামে এসে বলেছিলে, এখানে কোন দল নেই এখানে আছে শুধু ওসমান পার্টি আর ওসমান লীগ। মানুষের জিবনে অনেক চাহিদা থাকে, আমার কোন চাহিদা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি সেলিম ওসমান প্রথম সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, স্কুলের সমানে মাঠ থাকতে হবে। আমার ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাকে দাদু বলে ডাকে। একটা মানুষের কি লাখ লাখ নাতি-নাতনি থাকতে পারে? আমি কোন স্কুলে গেলে দাদু, দাদু বলে আমার দিকে দৌড়ে আসে, আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমি প্রায় ২০০ কোটি টাকা নিজ থেকে দান করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করতে চাই, আমি কাজ করতে পেরেছি। আমাকে তার জন্য মানুষ দোয়া করেছে। আমি বলবো না, আমাকে ভোট দেন। ভোট দেওয়ার কথা আপনারা বলবেন। আমি বলবো না, ১০টা টাকা আপনি আপনার পকেট থেকে খরচ করেন। শুধুমাত্র মানুষকে বলেন। আজ আমি আপনাদের কাছে কাঙ্গাল হয়ে এসেছি। আমি কখনো বলিনি আমি এমপি, আমি সব সময় বলেছি আমি মানুষের গোলামি করি। আমার বিশ্বাস আপনাদের দোয়ায় আগের থেকেও ভালো রেজাল্ট আপনাদের দিতে পারবো।
‘ধর্ম নিয়ে এখন রাজনীতি চলে। মানুষকে যদি কেউ ভালোবাসতে না পারে, তাহলে সে ভালোবাসা পায় না। আপনারা যারা ব্যবসায়ী আছেন তারা রাজনীতে জড়াবেন না। আমার কাজের সাথে, আরামের কোন সম্পর্ক নাই। আমাকে যে সংবর্ধনা দেয়া হয়েছে, সেটা বাংলাদেশের কোন এমপি পেয়েছে কিনা সন্দেহ আছে। দেশ স্বাধীন বলার সাথে সাথে স্বাধীন হয়ে যেতো। পতাকা উড়িয়ে দিতাম, দেশ স্বাধীন। কিন্তু আমাদের মধ্যে মির্জাফর-বেইমান রয়েই গেছে।
বিএনপির উদ্দেশ্যে সেলিম ওসমান বলেন, বিএনপি চায় যে ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে না যায়। আর সারা বিশ্ব চায় ভোটাররা যাতে ভোট কেন্দ্রে যায়। মানুষ যাতে বলতে পারে, যে আমি ভোট কেন্দ্রে গিয়েছিলাম, আমার ভোট আমি দিয়েছি; যাকে খুশি দিয়েছি। ওনারা এখন একটাই কথা বলছে, যে সরকার ভেঙ্গে দাও। আর মার্চ মাসের দিকে নির্বাচন করো। আরে উনি কি সরকার। আমাদের গণতন্ত্রে যেভাবে আছে, ঠিক সেভাবেই নির্বাচন হবে। তাদের বার বার বলা হচ্ছে আপনারা যদি আসেন তাহলে আমাদের হাতে আরও ১০দিন সময় আছে। আমি সেলিম ওসমান যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে কালকে মনোনয়ন জমা দিয়ে নির্বাচন করবো, তাহলে আপনাদের ওই নেতারা কই আছে।
তিনি বলেন, আপনাদের কাজ কি এটা যে আপনারা কোর্ট বন্ধ করে দিবেন। বাসে আগুন লাগিয়ে দিবেন, কার জন্য? এগুলো থেকে আল্লাহ আমাদের মুক্তি দিক। আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে আমাদের এর থেকে বের করে নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা একসাথে থাকবো। এক সাথে কাজ করবো। আল্লাহ যতদিন আমাকে জিবিত রাখবে ততদিন আপনাদের পাশে থাকবো। অগ্নিসন্ত্রাস সরকার বিএনপির আমলে আমাদের আদমজি জুট মিল বন্ধ করে লাখ লাখ মানুষের ক্ষতি করেছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন- বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, নারায়ণগঞ্জ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশ ইয়ার্ণ মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সভাপতি লিটন সাহা, বাংলাদেশ হোসিশারী সমিতির সভাপতি নাজমুল আলম সজল, বিকেএমিএ সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল হক, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাষ্ট্রির পরিচালক হোসনে আরা বাবলী, বাংলাদেশ ইয়ার্ণ মার্চেন্টস এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ সোলায়মান, বাংলাদেশ লবন মিল মালিক গ্রুপের সভাপতি পরিতোষ সাহা, বিকেএমইএ’র সহ সভাপতি সোহেল, পাট আড়তদার সমিতি সভাপতি ফয়েজ উদ্দিন লাভলু, বাংলাদেশ নিট ডাইং অনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি সৈয়দ আমজাদ হোসেন, বিকেএমইএ’র সহ সভাপতি জি.এম ফারুক শাহাদাত হোসেন ভুইয়া সাজনুসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।