আড়াইহাজারে পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের পরিদর্শন: গ্যাস সংকটের সত্যতা মিলেছে, সমাধানের আশ্বাস
লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আড়াইহাজার উপজেলার শতাধিক শিল্প কারখানায় চলমান তীব্র গ্যাস সংকটের বিষয়ে সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ কর্পোরেশন (পেট্রোবাংলা) এর চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান। শনিবার (২১ জুন) সকালে দুপ্তারা ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকায় অবস্থিত লিড প্লাটিনাম সনদপ্রাপ্ত সবুজ কারখানার স্বীকৃতি পাওয়া ‘মিথিলা টেক্সটাইলের ওভেন ডাইং’ পরিদর্শনের সময় তিনি গ্যাস সংকটের সত্যতা স্বীকার করে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) শাহনেওয়াজ পারভেজ।
আড়াইহাজারের শিল্প মালিকরা অভিযোগ করছেন, গত তিন মাস ধরে তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে দেড় শতাধিক শিল্প কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) এবং ডিজেলচালিত জেনারেটরের ওপর নির্ভরতা বাড়ায় উৎপাদন ব্যয় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং উৎপাদন সক্ষমতা কমেছে। এর ফলে কারখানার মালিকরা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
পরিদর্শনকালে মিথিলা গ্রুপের চেয়ারম্যান আজহার খান পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের কাছে তাদের ভোগান্তির বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, “গত বছরের অক্টোবরের পর থেকে গ্যাসের চাপ দিনের বেলায় শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ পিএসআই এবং রাতের বেলায় দেড় থেকে ২ পিএসআইয়ে নেমে এসেছে। এ অবস্থায় কারখানা চালু রাখা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে উৎপাদনের পরিমাণ ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে।”
আজহার খান আরও বলেন, “কেবল গ্যাসের অভাবে অনেক বায়ারের অর্ডার নিতে পারছি না। যে কয়টা অর্ডার রয়েছে, লোকসান হলেও বায়ারদের সঠিক সময়ে পণ্য সরবরাহের জন্য তিনগুণ বেশি ব্যয়ে গ্যাসের বদলে তুষচালিত বয়লার ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি স্বাভাবিক গ্যাস সরবরাহ থাকতো, তাহলে প্রতি বছরে মিথিলা গ্রুপে প্রায় একশ’ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা যেত।” এ সময় কারখানার মালিকের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যান।
গ্যাসের অস্বাভাবিক উঠানামার বিষয়ে জানতে চাইলে তিতাস এমডি শাহনেওয়াজ পারভেজ দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি সমকালকে জানান, “সারাদেশেই গ্যাসের সরবরাহ কম। অন্যদিকে, যেখান থেকে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে, আড়াইহাজার উপজেলা হচ্ছে সর্বশেষ প্রান্ত। ফলে অন্য মিল কারখানাগুলো গ্যাস টানার পরে আড়াইহাজার এলাকায় এসে গ্যাসের চাপ তেমন থাকে না।” তিনি এ বিষয়টি দ্রুত সমাধানের পদক্ষেপ নেবেন এবং সরকার এ সমস্যার উত্তরণে কাজ করছে বলে জানান।
আড়াইহাজারের শিল্প উদ্যোক্তারা আশা করছেন, পেট্রোবাংলা চেয়ারম্যানের এই পরিদর্শনের পর দ্রুতই গ্যাস সংকটের সমাধান হবে এবং তাদের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো আবারও পূর্ণ উৎপাদনে ফিরতে পারবে।