শুক্রবার, জুলাই ১১, ২০২৫
Led01রাজনীতি

অত্যাচারিত ও নিপীড়িত মানুষের অভিশাপেই তাদের পতন হয়েছে: গিয়াসউদ্দিন

লাইভ নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জের রাজপথ আবারও উত্তপ্ত হলো রাজনৈতিক বাগ্যুদ্ধে। ১৬ বছর ধরে ফ্যাসিবাদী কায়দায় দেশ শাসন করে শেখ হাসিনা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন বলে মন্তব্য করেছেন,বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন । বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপি আয়োজিত সদস্য সংগ্রহ ও সদস্য নবায়ন কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই বিস্ফোরক মন্তব্য করেন।

গিয়াসউদ্দিনের অভিযোগের তীর বিশেষভাবে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় রাজনীতির দিকে। তিনি বলেন, “আপনারা জানেন, শেখ হাসিনার আমলে অনেক গডফাদার, অনেক সন্ত্রাসী তৈরি হয়েছে। তেমনি এক গডফাদার তৈরি হয়েছিল আমাদের নারায়ণগঞ্জে, সন্ত্রাসীদের স্বর্গরাজ্য প্রতিষ্ঠা করেছিল।” তার ইঙ্গিত স্পষ্টতই আলোচিত ৭ খুন মামলার দিকে। তিনি বলেন, “গডফাদারের এক বিশিষ্ট সন্ত্রাসী ছিল এই শিমরাইল এলাকায়, ৭ খুন করেছে। এই খুনের কারণে নারায়ণগঞ্জকে, সিদ্ধিরগঞ্জকে সারা বাংলাদেশের মানুষ চিনেছে। ঘৃণা, লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট করে ফেলেছে।”

তিনি আরও দাবি করেন, জুয়া, মদ ও বিভিন্ন নেশাজাতীয় দ্রব্য বিক্রি করে উঠতি বয়সের ছাত্র সমাজের চরিত্র সেদিন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছিল। মানুষের ওপর নেমে এসেছিল অন্যায়-অত্যাচারের খড়গ। “সেদিন মানুষ তার সামনে গিয়ে কথা বলতে পারে নাই, তাকে বাধা দিতে পারে নাই,” বলেন গিয়াসউদ্দিন। তিনি ওই সন্ত্রাসীর উত্থান প্রসঙ্গে বলেন, “এই সন্ত্রাসী একটি গরিব ঘরের সন্তান হয়ে কোটি কোটি টাকা অর্থসম্পদ লুণ্ঠন করেছে ভাই-বেরাদার, আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে। নারায়ণগঞ্জকে চুষে বেরিয়েছে।”

গিয়াসউদ্দিনের মতে, অত্যাচারিত ও নিপীড়িত মানুষের অভিশাপেই তাদের পতন হয়েছে। তিনি বলেন, “তাদের অপকর্মের কারণে আল্লাহর তরফ থেকে গজব নেমে এসেছে। তারা আজকে কোথায়? বন্দী খাঁচায়, জেলখানায়।” তবে, কারাগারে থেকেও তাদের অপকর্ম ও লুণ্ঠন থেমে নেই বলে অভিযোগ করেন তিনি। “জেলখানায় থেকেও আজকে তারা অপকর্ম ও লুণ্ঠন করে নেয়। তাদের সহযোগী আছে যারা, অর্থাৎ সম্পদ সংগ্রহ করে তাদের হাতে তুলে দেয়। সেখান থেকে তারা ষড়যন্ত্র করে কিভাবে এই এলাকায় হত্যাকাণ্ড করবে, কিভাবে তারা আবার স্বৈরশাসক নিয়ন্ত্রণ করবে।” তাদের ভাই-ভাতিজাদের বিরুদ্ধে মিল-ফ্যাক্টরি থেকে চাঁদাবাজি ও লুটতরাজের অভিযোগও করেন তিনি।

অস্ত্র উদ্ধারের প্রসঙ্গে গিয়াসউদ্দিন প্রশ্ন তোলেন, “তাদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়েছে কিন্তু তাদের সাথে থাকা ঝমঝম করা অস্ত্র তা এখনো উদ্ধার হয়নি।” তবে, নিজেরা প্রতিহিংসার রাজনীতি করেন না উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা প্রতিহিংসাপরায়ণ নই। সেজন্য তাদের ঘরগুলো, বাড়িগুলো এখনো যে জায়গায় ছিল সে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে। অন্য জায়গায় সেগুলো মাটির সাথে মিশে গেছে আপনারা জানেন।”

বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা ব্যক্ত করে গিয়াসউদ্দিন বলেন, “যারা সন্ত্রাসী করেছে, লুণ্ঠন করেছে, তাদের আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এটাই আপনাদের থেকে জনগণ প্রত্যাশা করে।”

৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আবুল হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আকবর হোসেনের পরিচালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আব্দুল হাই রাজু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম জুয়েল, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সহ-সভাপতি সেলিম মাহমুদ, মোস্তফা কামাল, এস.এম. আসলাম, ডি.এইচ. বাবুল, জি.এম. সাদরিল, অ্যাড. মাসুদুজ্জামান মন্টু, যুগ্ম-সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীন, কামরুল হাসান শরীফ, দপ্তর সম্পাদক ডা. মাসুদ করিম, শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণদলের সভাপতি টি.এইচ. তোফা, মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মমতাজ উদ্দিন মন্টু, মহানগর যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক সাগর প্রধান, ৩নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম ভূঁইয়া, ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সিকদার, ১০নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আনিস সিকদার, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ৬নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মোস্তফা, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শরীফ হোসেন, যুবদল নেতা মাহবুব, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এ কে হিরা ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন রনি প্রমুখ।

RSS
Follow by Email