বুধবার, অক্টোবর ৯, ২০২৪
Led05বিশেষ প্রতিবেদনরাজনীতি

পূর্ণ কমিটিহীন আ.লীগ, সক্রিয়তা নেই জাতীয় পার্টির, মাঠ গরম বিএনপির

*আ.লীগ না.গঞ্জে আরও শক্তিশালী ও সক্রিয় হয়ে উঠবে: আব্দুল হাই
* না.গঞ্জ আওয়ামী লীগ সর্বদা প্রস্তুত থাকে: ভিপি বাদল
*আমরা বিদেশীদের উপর নির্ভরশীল না: সানু
*আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে সক্রিয় আছি: আফজাল
*দাবি আদায় হলে আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাববো: গিয়াসউদ্দিন
* গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের চেষ্টা আমরা করছি: রাজিব

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: আসছে জাতীয় নির্বাচন। রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ নড়েচরে বসতে শুরু করেছে, ক্ষমতার লড়াইয়ে অংশগ্রহনের সরগরম প্রস্তুতী নিচ্ছে দল গুলো। চারদিকে মূল ধারার সংগঠন আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি এখন আলোচনার তুঙ্গে। জন্মস্থানে রাজনীতির মাঠে আওয়ামী লীগের নেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি। একই অবস্থা বিএনপি’র হলেও চাঙ্গা করে রেখেছে নানা আন্দোলন-কর্মসূচি দিয়ে। তবে, একেবারেই কর্মসূচিহীন সক্রিতায় পিছিয়ে পড়েছে জাতীয় পার্টি।

আওয়ামী লীগের তৃণমূল বলছে, দীর্ঘ ১বছর হতে চললো জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন হয়েছে। কিন্তু এখন অব্দি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন হয়নি। এতে করে পদ পদবী না থাকায়, ব্যাক্তি ব্যানারেই নানা কর্মসূচি পালন করছে নেতৃবৃন্দ। তবে ধারণা করা হচ্ছে, পূর্ণাঙ্গ কমিটি হলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। জাতীয় নির্বাচনে জেলার সবচেয়ে শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে রূপ নিবে আওয়ামী লীগ।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, আমরা নির্বাচন নিয়ে প্রস্তুত আছি। কিছুদিনের মধ্যে আমাদের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আসবে, পাশাপাশি মির্জা আজম ভাইও আসবে। খুব শীঘ্রই আমাদের র্পূণাঙ্গ কমিটি চলে আসবে নির্বাচনের আগেই। আমাদের কমিটি হয়ে গেলেই আমরা নারায়ণগঞ্জে ৫টা আসনে ভাগ করে দিবো নেতৃবৃন্দ। আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জে আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে ও সক্রিয় হয়ে উঠবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আবু হাসনাত শহিদ মো. বাদল (ভিপি বাদল) লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়ালো ভাবেই সোচ্চার আছি। অক্টোবর মাস জুড়ে আমাদের নানান কর্মসূচি আছে। এখন পর্যন্ত আমরা স্ব স্ব অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম ও কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছি। নারায়ণগঞ্জ আওয়ামী লীগ সর্বদা প্রস্তুত থাকে। তাছাড়া আমাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে নির্দেশনা দিচ্ছে আমরা সেই ভাবেই আওয়ামী লীগ সক্রিয় ভূমিকা পালন করছি। আমরা কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দর সাথে কথা বলেছি, অচিরেই আমাদের নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি চলে আসবে। আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে আগামী নির্বাচনের কাজ করবো।

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার ফলে নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি শক্ত হয়েছে। ১৫ বছরে তৃণমূলে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যেখানেই দুর্বল হয়েছে, সেখানেই আওয়ামী লীগ অবস্থান শক্ত করেছে। জেলার পাঁচটি আসনে মাত্র দুজন সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির। এর মধ্যে একটি নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁও), আরেকটি নারায়ণগঞ্জ-৫ (সদর-বন্দর)। বাকি তিনটি আসন এখন আওয়ামী লীগের দখলে। তবুও তেমন কোন কর্মসূচিতে দেখা মিলে না জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির। তবে, নেতাকর্মীরা বলছে অক্টোবর মাস থেকে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রীয় নানান কর্মসূচি ঘোষণা আসবে। এতে নারায়ণগঞ্জ জাতীয় পার্টি সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি সানাউল্লাহ সানু লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমাদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ অক্টোবর মাসেই বিভিন্ন জেলার নেতার্কমীদের নিয়ে একত্রিত হয়ে বসবে। জাতীয় নির্বাচনকে নিয়ে আমাদের কর্মসূচি কেমন থাকবে, সে বিষয়ে আলোচনা হবে। তাছাড়া আমাদের বিএনপি’ও চায় আওয়ামী লীগও চায়। আমরা তো ট্রাম্প হয়ে আছি। আমরা তো জ্বালাও পোড়াও করি না, করলে হয়তো সক্রিয় মনে করতো মানুষ। বর্তমানে আওয়ামী লীগও বিদেশীদের কাছে দৌড়াচ্ছে বিএনপিও একই কাজ করছে। আমরা বিদেশীদের উপর নির্ভরশীল না। আমরা বাঙ্গালী জাতি বীরের জাতি আমরা এই দেশকে স্বাধীন করেছি। আমরা চাই না বিদেশীরা আমাদের দেশে কোন ভাবে হস্তক্ষেপ করুক।

তিনি আরও বলেন, আমরা আমাদের দেশকে লিবিয়া ইরাক বানাতে চাই না। আমরা চাই এই দেশকে শান্তিপ্রিয় বানাতে। আমাদের জাতীয় পার্টি কেন্দ্রের নির্দেশনা পেলে আমরা রাজপথে ঝাপিয়ে পড়বো।

নারায়ণগঞ্জ মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. আফজাল হোসেন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, রাজনৈতিক দল গুলাতে মূলত কেন্দ্র থেকে কর্মসূচি দিলেই জেলা গুলোতে কর্মসূচি করে থাকে। তাছাড়া আমরা জেলায় কোন ভাবেই নিস্ক্রিয় না আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে সক্রিয় আছি। জনগণকে নিয়ে তাদের ভাগ্য উন্নয়নের রাজনীতি হলো আমাদের দলের মূল কাজ। আমাদের নারায়ণগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান সরকারি তহবিলসহ নিজের ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখছে। জাতীয় পার্টি উন্নয়ণের রাজনীতি বিশ্বাস করে। তাই জাতীয় নির্বাচনে আমাদের বিশ্বাস আমাদের উন্নয়ণের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে জনগণ আবার আমাদের ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে।

দীর্ঘ বছর ধরে জেলা ও মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলেছে। জেলা সম্মেলন হলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। তবুও টানা আন্দোলন কর্মসূচি দিয়ে রাজনীতির মাঠ গরম রেখেছে তারা। নেতাকর্মীরা বলছে, নির্বাচন নিয়ে আপাতত তাদের তেমন কোন মাথা ব্যাথা না থাকলেও আন্দোলন সফল হলে, জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী বিষয়ে চিন্তাভাবনা করা হবে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমাদের জেলা বিএনপির সম্মেলন যখন হয়, তখনও আমরা আমাদের আন্দোলন সংগ্রাম চলমান রেখেছি। সম্মেলনের পরদিন থেকেই কিন্তু আমাদের আন্দোলনে কর্মসূচি শুরু করতে হয়। যতদ্রুত পূর্ণাঙ্গ জেলা কমিটি করে দেয়া হবে ততই আন্দোলন সংগ্রামে ভূমিকা সহায়ক হবে। নবীন প্রবীনের একটা সংমিশ্রণ রেখে, যারা ফিল্ডে কাজ করে তাদের নিয়ে যাতে হয় কমিটি। এবারই আমরা এমন একটা কমিটি করতে যাচ্ছি, যেখানে নেতাকর্মীরা আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপিকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। আমরা নির্বাচন নিয়ে আপাতত ভাবছি না, আমাদের ১দফা দাবি বাস্তবায় ও আমাদের বিএনপি’র চেয়ারপার্সনকে উন্নত চিকিৎসা প্রদানে জন্য আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমাদের দাবি আদায় হলে আমরা নির্বাচন নিয়ে ভাববো।

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজিব লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা পদ পদবী নিয়া বেশী চিন্তিত না। আমাদের প্রধান কাজ হচ্ছে, আমাদের দলের চেয়ারপার্সন অসুস্থ উনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার যে চেষ্টা আছে, সেটা আমরা করে যাচ্ছি। বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার যে চেষ্টা আমরা করছি, এই আন্দোলনের সফলতার শীর্ষে পৌছায় দেয়াই আমাদের আন্দোলনের মূখ্য কাজ।

RSS
Follow by Email