মঙ্গলবার, ডিসেম্বর ৩, ২০২৪
Led05ধর্মবিশেষ প্রতিবেদন

না.গঞ্জে তুলির আঁচড়ে সাজছে প্রতিমা

#এবার পরিবেশ বান্ধব প্রমিতা তৈরী করা হচ্ছে: প্রতিমা শিল্পী
#সকল মন্দিরে পূজার জন্য প্রস্ততি নেয়া শুরুও হয়ে গেছে: শিপন সরকার
#৩ ধাপে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছি: এসপি রাসেল

সামিতুল হাসান নিরাক, লাইভ নারায়ণগঞ্জ: শিল্পীর নিপুণ হাতে তৈরি করেন দেবী দুর্গাকে। এ যেন প্রতিমা শিল্পীদের মায়ার বাঁধন। নরম কাদা-মাটি দিয়ে শৈল্পিক ছোঁয়ায় তিল তিল করে গড়ে তোলা দশভুজা দেবী দুর্গার প্রতিমায় ভরে উঠেছে প্রতিটি মণ্ডপে। নানান রঙ আর তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে দেবীর প্রতিচ্ছবি। তাই যেনো ফুরসত নেই প্রতিমা শিল্পীদের। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গা পুজা। রঙের আঁচড় আর সাজসজ্জায় দুর্গাদেবীকে সাজাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারায়ণগঞ্জের প্রতিমা শিল্পীরা।

দুয়ারে কড়া নাড়ছে শারদীয় দুর্গাপূজা। আগামী ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হবে মূল উৎসব। গত বছর ২১৮টি মণ্ডপে পূজা হলেও এবার ২২৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে এসব পূজা মণ্ডপের মধ্যে সোনারগাঁও উপজেলায় একটি মণ্ডপে হবে ঘট ও স্থাতি পূজা (প্রতীমা বিহীন)। আগামী ২০ অক্টোবর ৫ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা শুরু হবে। এবারের দুর্গাপূজার মহাষষ্ঠী পড়ছে আগামী ২০ অক্টোবর, মহাসপ্তমী পড়ছে ২১ অক্টোবর, মহাষ্টমী পড়ছে ২২ অক্টোবর, মহানবমী পড়ছে ২৩ অক্টোবর এবং ২৪ অক্টোবর মহাদশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম এই ধর্মীয় উৎসব। এছাড়া নির্বিঘ্নে উৎসব সম্পন্ন করতে মন্দির ভিত্তিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।

সরেজমিনে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপ ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিমা শিল্পীদের এখন নির্ঘুম রাত কাটছে। রাতদিন এক করে শুধু কাজ চলছে। কেউ মাটির কাজ শেষ করে দেবীর গায়ে দিচ্ছেন তুলির আঁচড় আবার কেউ ব্যস্ত প্রতিমার গায়ে কাঁদা মাটির প্রলেপ লাগাতে। তাদের যেনো দম ফেলার সুযোগ নেই। রাত দিন কাজ করে যাচ্ছেন প্রতিমা শিল্পীরা।

মিনাবাজার শ্রী শ্রী গোপীনাথ জিউর আখড়া মন্দিরে অলংকারসজ্জার কাজ করতে আসা অভি কর নয়ন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, আমি নারায়ণগঞ্জ চারুকলা ইন্সটিটিউট এর শিক্ষার্থী। প্রতিমা তৈরীর কাজে একটা শৈল্পিকতা বিদ্যমান। ৭ বছর যাবত এই কাজের সাথে জড়িত। এবার আমরা ২টি কাজ করছি। আমাদের এবারের মূল কনসেপ্ট হলো পরিবেশ বান্ধব প্রতিমা তৈরী করা। এবারের দূর্গা মায়ের মূর্তিসহ সকল প্রতিমা গুলোতে গহনা থেকে শুরু করে শাড়ী সব কিছু পরিবেশ বান্ধব। সমস্ত সামগ্রী মাটিতে পচনশীল।

টানবাজার সাহাপাড়া মন্দিরে আরাফ খান ফরহাদ নামে এক যুবকের সাথে কথা হয় লাইভ নারায়ণগঞ্জের এই প্রতিবেদকের। তিনি বলেন, পূজার সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করছি। আশা করি সাম্প্রদায়িক শক্তিকে পরাজিত করে সুন্দর একটি দুর্গোপূজো অনুষ্ঠিত হবে। পূজার লাইটিং থেকে মন্ডপের প্রায় সব গুলো সজ্জার কাজ করছি। এটা দীর্ঘ দিনের পেশা আমার।

বন্দরে সনাতন সেবা সংঘ মন্দিরে কাজ করছেন এক প্রতিমা শিল্পী লাইভ নারায়ণগঞ্জকে জানান, আমি বহু বছর যাবৎ প্রতিমা তৈরি করে আসছি। সবকটি প্রতিমার মাটির কাজ শেষ। এখন চলছে রঙের কাজ। প্রতিমা তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি, খড়, পাট, কাপড়, বাঁশ ও রঙ। কারিগরের সুনিপুণ হাতের কাজ প্রতিমাকে আরও বেশি উজ্জ্বল ও সুন্দর করে তোলে। কাজের আকার ভেদে পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন তিনি।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিপন সরকার শিখন লাইভ নারায়ণগঞ্জকে বলেন, নারায়ণগঞ্জে এবার মোট ২২৪টি স্থানে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। আমরা এ বিষয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর জেলা প্রশাসকের সাথে একটি প্রস্ততি সভা করেছি। ইতিমধ্যে নারায়ণগঞ্জের সকল মন্দিরে পূজার জন্য প্রস্ততি নেয়া শুরুও হয়ে গেছে।

দূর্গা পূজায় এবার তিন ধাপে বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ। জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, আমরা নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ এবার শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষে ৩ ধাপে নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। এছাড়া এবার যাতে কোন গুজব অথবা প্রপাগান্ডা না ছড়াতে পারে তার জন্য সাইবার মনিটরিং থাকবে।

RSS
Follow by Email